পলিহাউজে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চাষাবাদ।

পলিহাউস হলো এমন একটি ঘর যা পলিথিনের মতো স্বচ্ছ উপাদান দিয়ে তৈরি এমন একটি কাঠামো যেখানে নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়ায় উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং বিকাশ ত্বরান্বিত করা সম্ভব হয়।
প্রয়োজন অনুসারে কাঠামোটি ছোট আকারের খুপরি ঘর থেকে শুরু করে বড় আকারের বিল্ডিংয়ের মতো ভিন্ন ভিন্ন আকারের হতে পারে। এটি আসলে বিশেষ ধরনের পলিথিন শিটের ছাউনি দেওয়া ঘরের মতো। যার মাধ্যমে উদ্ভিদের গায়ে কোনওভাবেই সরাসরি সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি লাগে না। ফলে উদ্ভিদের সুষম বৃদ্ধি বিঘ্নিত হয়না।
কৃষিবিজ্ঞানীদের মতে, পলিহাউস পদ্ধতিতে চারদিকে পলিথিনের ছাউনি থাকায় সূর্যের তাপ সরাসরি খেতে ঢুকতে পারে না। ফলে, শীতের সব্জি গরমেও চাষ করতে অসুবিধা হয় না। এই পদ্ধতিতে পানির অপচয় রোধ হয়। সার দেওয়া হয় নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে। পলিথিনের কাভার থাকায় দুর্যোগের প্রকোপও অনেকটা ঠেকানো সম্ভব হয়। সব মিলিয়ে পলিহাউস পদ্ধতিতে ফসলের অন্তত ৩০-৪০ শতাংশ ফলন বেশি হয় বলে দাবি কৃষি বিশেষজ্ঞদের।
যেসব কৃষক মৌসুম ছাড়াও ফসল চাষ করে অধিক মুনাফা লাভ করতে চান বিশেষত যারা জৈব চাষ পছন্দ করেন তাদের পক্ষে খুব উপকারী। পলিহাউসের কিছু সুবিধা এখানে দেওয়া হল:
(১) গাছপালা নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রার মধ্যে জন্মায় বা বেড়ে উঠে বলে শষ্য নষ্ট হওয়া বা ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা এরকবারেই কম থাকে।
(২) সারা বছর ধরে ফসলের চাষ করা যায় এবং কোনও নির্দিষ্ট মৌসুমের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না।
(৩) পলিহাউসে পোকামাকড় কম হয় ।
(৪) বাহিরের বৈরি আবহাওয়া ফসলের বৃদ্ধিতে কোনো প্রকার ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারেনা।
(৫) পলিহাউসে উচ্চতর গুণমানের ফসল উৎপাদিত হয়।
(৬) বায়ু চলাচল ও বর্জ নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা রাখা যায়।
(৭) একটি পলহাউসে উৎপাদিত উচ্চ মূল্যের ফসলের প্রচার অনায়াসেই করা যায়।
(৮) পলিহাউস যেকোনো মৌসুমে উদ্ভিদের সঠিক পরিবেশগত সুবিধা নিশ্চিত করে।
(৯) পলিহাউস পদ্ধতিতে ফসলের অন্তত ৩০-৪০ শতাংশ ফলন বেশি হয়।
(১০) অপেক্ষাকৃত কম সময়ে ফসল আহরণ করা যায়।
(১১) ড্রিপ ইরিগেশান ব্যবস্থার সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সহজে সার প্রয়োগ করা যায়, ফলে সার ও পানির অপচয় একেবারেই কম হয়।